
একই সময়ে দুইটা ব্যাপার ঘটছে।
এবারের বই মেলায় প্রতিটি বই যাচাইবাছাই করার পর স্টলে যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বাংলানিউজে এমন একটা খবর পড়েছি।
আমার ধারণা, নাস্তিকতা বিষয়ক বইগুলো ফিল্টার করা হবে। একইসাথে গত বছর থেকে নাস্তিকতার কাউন্টার পজিশন থেকে আস্তিকদের যেসব বই বেরুচ্ছে, সেগুলোও ফিল্টার করা হবে বলে আমার ধারণা। এর বাইরে অন্য কোনো ব্যাপারও থাকতে পারে অবশ্য।
দ্বিতীয় আরেকটা ব্যাপার গত দুদিন ধরে দেখছি। রকমারি ডট কমে আরজ আলী মাতুব্বুরের বই বিক্রির উপর একটা ডিসকাউন্ট অফার দেয়া হয়েছে। এটা নিয়ে আস্তিক একটিভিস্টদের কেউ কেউ ক্ষেপেছেন দেখছি।
যে বিবেচনাতেই ধরা হোক না কেন, একটা সহনশীল, ইনক্লুসিভ সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই উভয় ধরনের পন্থাই ক্ষতিকর, নেতিবাচক। সমাজে আস্তিকতা-নাস্তিকতা উভয় ঘরানার মতামতগুলো প্রকাশের সুযোগ থাকলে, উভয় পক্ষ যার যারর মত প্রকাশের সুস্থ পথ ও জীবনযাপনের নিরাপত্তা পেলে উগ্রতা/স্বশস্ত্র বিরোধিতা মিনিমাইজ হয়ে আসবে। কিন্তু মত প্রকাশের পথটাই যদি রুদ্ধ করে দেয়া হয়, তাহলে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যা আদতে কারো জন্যই ভালো নয়।
নিরাপত্তার নামে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ, ধর্ম রক্ষার নামে আস্তিকদের নাস্তিকতা রিলেটেড বই বিক্রিতে বাধা দেয়া কিংবা ভাইস ভার্সা – এগুলো স্বাভাবিক পন্থা নয়।
বাংলা একাডেমির বইমেলা দিন দিন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে। ইসলামী ঘরানার প্রকাশকদের স্টল দেয়ার সুযোগ এতদিন ছিলো না। এবার বোধহয় নাস্তিকদের প্রকাশনা ফিল্টার করা হবে। তাই এমন একটা বিকল্প উদ্যোগ গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেখানে সকল মত-পথের বই বিক্রির সুযোগ থাকবে। এ ধরনের একটা বিকল্প বইমেলা সপ্তাহখানেকের জন্য হলেও চালু করা দরকার।