
এক ছোট ভাই গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকতের সন্ধান দিলো গতকাল রাতে। বেশ চমৎকার নাকি জায়গাটা। তো, আজকে সকালে দেখতে গেলাম।
ফকিরহাট থেকে বেড়িবাধ ধরে সৈয়দপুর পর্যন্ত গিয়েছি। অন্তত ৩০/৩৫ কিলোমিটার হবে। চমৎকার প্রকৃতি। মানুষগুলোও অসাধারণ। সাদামাটা, আন্তরিক।
পথে পথে শত শত খেজুর গাছ দেখলাম। স্থানীয়রা শীতের সিজনে রস নামান। শহরে এনে ভোরে বিক্রি করেন। দেখে খেতে ইচ্ছা হলো। কিন্তু তখন সবেমাত্র গাছিরা রসের পাত্র বসাচ্ছেন। সৈয়দপুর গিয়ে এক গাছে কিছুটা রস জমেছে দেখলাম। পাশের দোকানদারের গাছ। জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, তিনি গাছ বাধতে গেছেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তিনি এলেন। আমরা রস পানের ইচ্ছার কথা জানালাম। পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করতে বললেন।
তারপর গাছ থেকে পেড়ে দুই গ্লাস রস নিয়ে এলেন। একদম তাজা। সুমিষ্ট। দাম দিতে গেলে কোনো মতেই নিলেন না। দাম সাধায় রীতিমতো ইনসাল্ট ফিল করছেন দেখে আর সাধলাম না। দোকানদার খোরশেদ ভাই বললেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারলে এক কলস রস খাওয়াতে পারতেন।
দোকানে যখন উনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, তখন স্থানীয় আরেকজন দোকানে এলেন। হাতে একটি কাঁকড়া। মাত্র ধরে এনেছেন। আমরা কেনার আগ্রহ দেখালে কাঁকড়াটি উপহার দিয়ে দিলেন। তিনিও কোনোভাবেই দাম নিলেন না। পরে এক কাপ চা পান করিয়েছি।
পুরো অঞ্চলে স্থানীয় মানুষদেরকে অত্যন্ত কোঅপারেটিভ মনে হয়েছে। বাইরের লোকদেরকে তাঁরা মুসাফির-মেহমান মনে করেন। তাদের জন্য কিছু করতে পারাকে তারা নিজের সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব মনে করেন। নগরকেন্দ্রিক ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ এখনো সেখানে ডমিন্যান্ট হতে পারেনি। এই ব্যাপারটাতে মুগ্ধ হয়েছি।