
ছোটবেলায় আমার বেড়ানোর সবচেয়ে কমন প্লেস ছিল মেঝ আপার বাসা। দুলাভাই ছিলেন সেনাবাহিনীতে। সেই সূত্রে বগুড়া, সাভার ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে থেকেছি বহুদিন। বহুদিন মানে বহুদিনই। মাসের পর মাস।
বাড়ি থেকে আসার সময় যে ফুর্তিটা থাকতো, কয়েকদিন পর তা অবশ্য ম্লান হয়ে যেতো। আগের মতো সেই ফুর্তি ভাবটা আর থাকতো না। মনে পড়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মালবিকা বিল্ডিংটার কথা। আপারা থাকতেন সম্ভবত ১১ তলায়। বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিমানবন্দরের আলো চোখে পড়ত। প্লেনগুলোকে বেশ বড়সড় দেখা যেতো। বাড়ি যাওয়ার কথা মনে পড়লে রাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্লেনের আসা-যাওয়া দেখতাম।
বগুড়ায় অবশ্য প্লেন দেখা যেত না। বিল্ডিংও অত উঁচু ছিল না। সেখানকার অভিজ্ঞতাটা অন্যরকম ছিল। একই ডিজাইনের সারি সারি বিল্ডিং ছিল। রাতের বেলায় আলো দেখে ফ্ল্যাটগুলোকে আলাদা করা যেত। হইহল্লা ছিল না খুব একটা। গভীর রাতে প্রায় আধ কিলো দূরের মহাসড়কের দূরপাল্লার বাসের আওয়াজ পাওয়া যেত। কখনো হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতাম। ততক্ষণে ফ্ল্যাটগুলোর লাইট নিভে যেতো। বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটা ফ্ল্যাটের বারান্দার লাইট হয়তো জ্বলতো।
আজকে বাসার জানালায় দাঁড়িয়েছিলাম। এদিকে বিল্ডিং তুলনামূলক কম। সামনে ফসলের ফাঁকা মাঠ। আশপাশে কিছু বিল্ডিং আছে। হঠাৎ ছোটবেলার কথাগুলো মনে পড়লো। সময় কত দ্রুত চলে যায়…